ব্রেন স্ট্রোকের পর রোগীকে সচল করে তুলুন। জেনে নিন কিছু প্রয়োজনীয় টিপস।

ব্রেইন স্ট্রোক পুনর্বাসনে নতুন পদ্ধতিঃ ‘শুধু প্রাণ নিয়ে নয় – রোগীকে সচল করে ঘরে ফেরায়’।
ধারণত ব্রেইন স্ট্রোক হলে পক্ষাঘাতে মানুষের কোন না কোন শারিরীক কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, কখনো বা রোগী চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলে। কোনভাবে প্রাণে বেঁচে স্ট্রোক রোগী বাসায় ফিরে আসে – আমৃত্যু নিজে এবং পরিবারের মানুষদের জন্য বয়ে আনে চরম দূর্ভোগ । সারা জীবনের জন্য বয়ে বেড়ায় স্ট্রোকের অভিশাপ।
কিন্তু সেই দিন বুঝি এখন শেষ। রাজধানীর নিউ ইস্কাটনস্থ ‘ ইন্সটিটিউট অব নিউরো-ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ’ (আই এন ডি আর) স্ট্রোক রোগীদের জন্য নিয়ে এসেছে এক নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি যা অতি স্বল্প সময়ে স্ট্রোক রোগীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনে তাঁদের সম্ভাব্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনে। তবে এই পদ্ধতি প্রথাগত দীর্ঘমেয়াদী ফিজিওথেরাপি নয়, বরং ফিজিওথেরাপি ও অকুপেশনাল থেরাপির পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির কিছু আধুনিক প্রযুক্তিগত পদ্ধতির সমন্বয়ে এটি একটি সর্বাধুনিক মেথড অথচ খরচের দিক থেকে অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
ইংল্যান্ড থেকে উচ্চতর ডিগ্রী ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নিউরো-রিহ্যাব বিশেষজ্ঞের অধীনে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ‘ইন্সটিটিউট অব নিউরো-ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ’ দেশেই স্ট্রোক রোগীদের জন্য এই অত্যাধুনিক রিহ্যাবিলিটিশন সেবা দিচ্ছে। যা কিছুদিন আগেও পশ্চিমা বিশ্ব ছাড়া আর কোথাও কল্পনাও করা যেতো না। এমনকি ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশ সমুহেও স্ট্রোক পুনর্বাসনে এধরণের ব্যাবস্থার এখন পর্যন্ত তেমন সুযোগ নেই।
আই এন ডি আর ফিজিওথেরাপি ও অকুপেশনাল থেরাপির পাশাপাশি উচ্চ প্রজুক্তির নন-ইনভেসিভ ব্রেইন স্টিমুলেশন (নিউরো মড্যুলেশন, ট্রান্স ক্রেনিয়াল ফোটো-বায়ো মড্যুলেশন, ট্রান্স ক্রেনিয়াল ম্যাগনেটিক স্টিমুলেশন), ফাংশনাল ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেশন (FES), সাস্পেনশন গেইট ট্রেইনার (যা অত্যাধুনিক ভাবে হাঁটা’র সক্ষমতা ফিরিয়ে আনে); এমন সব আধুনিক পদ্ধতির সমন্বয়ে ব্রেইন স্ট্রোক রোগীদের সেবা প্রদান করছে, যার মাধ্যমে স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীগন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত সক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে।
সাধারণভাবে স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার কারণে স্ট্রোকজনিত লক্ষণসমূহ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। শরীরের কোন কোন অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে পড়ে। স্মৃতি শক্তি বা চিন্তা চেতনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় । কথা বলতে বা বুঝতে এবং আবেগে অসংলগ্নতা সহ নানা রকম স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়, যেসব শারীরিক ত্রুটি চিকিৎসা গ্রহণের পরও রোগীর কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যায়। কখনো বা জটিলতার কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে। এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিতে সেধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকাংশেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
ঢাকাসহ দেশের যে কোন প্রান্তের স্ট্রোক রোগীরাই বাংলাদেশ স্ট্রোক এ্যাসোসিয়েশন (World Stroke Organization এর বাংলাদেশ মেম্বার) এর অনুমোদিত ‘ইন্সটিটিউট অব নিউরো-ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ’ এর এই সর্বাধুনিক স্ট্রোক রিহ্যাবিলিটেশন সুবিধা পেতে পারেন, তবে স্ট্রোক রোগীদের আধিক্যের কারণে বেশ কিছু দিন আগে থেকেই টেলিফোনে (01931 40 59 86) অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত করেই রোগীকে নিয়ে যাওয়া উত্তম।

No comments:

Powered by Blogger.